প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্রে পরিপূর্ণ পাহাড়ি কন্যার নাম বান্দরবান। হাতে মেঘ ছুঁয়ে দেখা কিংবা পাহাড়ি সৌন্দর্যে বুঁদ হতে চাইলে পরিবার পরিজন কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন প্রকৃতির এই অনন্য নিঃস্বর্গ থেকে। পরিচিত দর্শনীয় স্থান যেমন নীলাচল, নীলগিরি, স্বর্ণমন্দির, মিলনছড়ি, চিম্বুক, মেঘলা যেমন আছে তেমনি আছে এডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্যে বগালেক, কেওক্রাডং, জাদিপাই, থানচি, রেমাক্রি, তিন্দু, নাফাখুম, আমিয়াখুম, রোয়াংছড়ি ও আলীকদমে দেখার মত অনেক জায়গা।

আমাদের এই বান্দরবান ট্যুর প্ল্যানে (Bandarban Tour Plan) শহর থেকে কাছে জনপ্রিয় এবং পরিবার পরিজন নিয়ে সহজে ভ্রমণ করা যায় এমন জায়গা গুলোর বিস্তারিত জানাবো। শহর থেকে দূরের জায়গা গুলো যেখানে সময় বেশি লাগে এবং পরিবার নিয়ে ভ্রমণের উপযুক্ত না সেই জায়গা গুলো এই প্ল্যানে আসবেনা। বান্দরবানের অন্যান্য ভ্রমণ স্থানগুলো সাধারণত অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ভ্রমণকারীদের জন্যে সবচেয়ে উপযুক্ত।

বান্দরবান ভ্রমণ প্ল্যান (১ রাত ২ দিন)

ট্যুর প্ল্যান সাধারণত ভ্রমণকারীদের সময়, সুবিধা ও ইচ্ছের উপর নির্ভর করে। প্রথমবার বন্ধুবান্ধব কিংবা যারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বান্দরবান যাবেন তারা সহজেই বান্দরবানের জনপ্রিয় জায়গা গুলো ঘুরে মেঘ ও পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। আমাদের উদ্দেশ্য বান্দরবান ভ্রমণ পরিকল্পনা নিয়ে একটা ধারনা দেওয়া। চাইলে আপনি আপনার মত করে সাজিয়ে নিতে পারেন সবকিছু।

বান্দরবানের কাছের জনপ্রিয় জায়গা গুলো ঘুরে দেখার জন্যে অন্তত এক রাত থাকা উচিত। এতে করে সুন্দর সব গুলো জায়গা ভাল করে বেড়ানো যায়। আর ১ রাত ২ দিনের প্ল্যান করলে সব জায়গা যেমন ঘুরে দেখা যায় সেই সাথে খরচটাও তুলনামূলক কম হবে। যে জায়গা গুলো ঘুরে দেখবেন –

১ম দিন : স্বর্ণমন্দির, মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র ও নীলাচল
২য় দিন : মিলনছড়ি, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক ও নীলগিরি

বান্দরবান ঘোরার জন্যে ৩ রকমের যানবাহন পাবেন। সিএনজি যা ২-৪ জনের জন্যে উপযুক্ত, মহেন্দ্র জীপ (ল্যান্ডক্রুজার) যা ৫-৮ জনের জন্যে উপযুক্ত এবং চান্দের গাড়ি ৮-১৫ জন্যের জন্যে উপযুক্ত। ভ্রমণ স্থান গুলো বেড়ানোর জন্যে আপনারা কতজন একসাথে সেই অনুযায়ী গাড়ি ঠিক করতে হবে।

প্রথম দিন

যেভাবেই বান্দরবান আসেন চেষ্টা করবেন যেন সকাল সকাল পৌঁছে যেতে পারেন। সকালে বান্দরবান পৌঁছে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিন। আগে থেকে হোটেল বুকিং করা না থাকলে কোন হোটেল ঠিক করে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিন। আপনার প্রথম গন্তব্য স্বর্ণমন্দির তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে মেঘলা এবং বিকেলে নীলাচল ঘুরে বেড়ালে ভাল লাগবে।

প্রথম দিনের জায়গা গুলো ঘুরে দেখার জন্যে একসাথে রিসার্ভ করে নিতে পারেন অথবা চাইলে প্রথমে স্বর্ণমন্দির দেখে তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে মেঘলা ও নীলাচল দেখার জন্যে আলাদা ভাবে গাড়ি নিতে পারেন। মহেন্দ্র জীপ বা চান্দের গাড়ি ঠিক করার জন্যে জীপ স্ট্যান্ডে গিয়ে লাইনে থাকা গাড়ি নিতে পারবেন। সব গুলো জায়গা ঘুরে দেখার জন্যে সিএনজি রিসার্ভ ৮০০-১০০০ টাকা, মহেন্দ্র জীপ ১২০০-১৬০০ টাকা এবং চান্দের গাড়ী ১৮০০-২২০০ টাকা লাগবে। তবে দামাদামি করে নিতে হবে এবং সিজন অনুযায়ী ভাড়া কম বেশি হতে পারে।

স্বর্ণমন্দির, বান্দরবান
স্বর্নমন্দির, বান্দরবান

তো গাড়ি নিয়ে প্রথমে চলে যান স্বর্নমন্দির। স্বর্ণমন্দির প্রবেশ করার জন্যে জনপ্রতি ৫০ টাকা করে টিকেট কাটতে হবে। যেহেতু এটি একটি ধর্মীয় স্থান, তাই এমন কিছু করবেন না যেন ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত লাগে। স্বর্ণমন্দির ঘুরে আবার শহরে ফিরে আসুন। শহরের কোন রেস্টুরেন্ট থেকে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন। অথবা চাইলে সরাসরি মেঘলা গিয়ে সেখানের খাবার হোটেল আছে খেয়ে নিতে পারবেন। তবে কম খরচে খেতে চাইলে শহরের হোটেল থেকে খেয়ে নেওয়াই ভাল হবে।

দুপুরে খেয়ে যদি হাতে সময় থাকে একটু বিশ্রাম নিতে পারেন। তবে নীলাচলের জন্যে যত বেশী সময় রাখবেন তত ভাল হবে। কারণ বিকেলের নীলাচল অনেক সুন্দর। তাই চেষ্টা করুন সেখানে আগে চলে যাবার। নীলাচল প্রবেশ করতে টিকেট কাটতে হবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যার সময়টুকু সেখানেই কাটিয়ে দিন।

নীলাচল, বান্দরবান
নীলাচল, বান্দরবান

নীলাচল থেকে এইবার আবার বান্দরবান শহরে হোটেলে ফিরে আসুন। ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নিয়ে রাতের খাবার এবং রাতের বান্দরবান শহর দেখার জন্যে বের হতে পারেন। রাতের বান্দরবান ভিন্ন রূপে আপনার কাছে দেখা দিবে। রাতের খাবার শেষে চাইলে ব্রীজে কাছে গিয়ে সাঙ্গুর রূপ দেখতে পারেন।

হোটেলে ফিরে এসে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাবার চেষ্টা করুন। পরদিন নীলগিরি দেখতে যেতে চাইলে সবচেয়ে ভাল হবে যত সকালে সম্ভব রওনা দেওয়ার। যত সকালে যেতে পারবেন পাহাড়ে মেঘ দেখার সম্ভবানা তত বেশী হবে।

দ্বিতীয় দিন

খুব সকালে উঠে নাস্তা করে নিন (সম্ভব হলে ভোর ৬ টার আগেই)। তারপর আপনার সুবিধামত যানবাহন ঠিক করে নিন। তবে এই ক্ষেত্রে সকালে সময় নষ্ট করতে না চাইলে আগেরদিন গাড়ি ঠিক করে রাখতে পারেন। তাহলে সকালে রেডি হয়েই রওনা হয়ে যেতে পারবেন।

নীলগিরি যাবার পথেই শৈলপ্রপাত ঝর্ণা, মিলনছড়ি ভিউ পয়েন্ট ও চিম্বুক পর্যটন কেন্দ্র। এই সব গুলো জায়গা একসাথে একদিনেই ভ্রমণ করতে পারবেন। সারাদিনের জন্যে সিএনজি ভাড়া নিবে ২০০০-২২০০ টাকা, মহেন্দ্র জীপ ২,৪০০-৩,০০০ টাকা এবং চান্দের গাড়ি ৩,৫০০-৪,২০০ টাকা। ভাড়াও ক্ষেত্রে দরদাম করে নিতে হবে এবং কোন কোন জায়গায় দাড়াবেন তাও কথা বলে নিবেন।

মনে রাখবেন চান্দের গাড়ি কিংবা জিপ ভাড়া আপনার দরদামের উপর নির্ভর করবে তাই ভাল মত দরদাম করে নিন। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে পিক সিজন থাকার কারণে সাধারণত ভাড়ার পরিমাণ আরও বেশি হয়ে থাকে।

নীলগিরি বান্দরবান
নীলগিরি; ছবি: যায়েদ বিন সালেহ

যদি খুব ভোরে রওনা দেন এবং মেঘ দেখার ইচ্ছেটাই বেশী থাকে তাহলে যাবার পথে কোথাও না দাঁড়িয়ে সরাসরি নীলগিরি চলে যান। নীলগিরি থেকে ফেরার পথে চিম্বুক, মিলছড়ি ও শৈলপ্রপাত ঝর্ণা ঘুরে আসবেন। নীলগিরি ও চিম্বুক প্রবেশের জন্যে টিকেট কাটা লাগবে। আর দুপুরের খাবার নীলগিরিতে করে নিতে পারেন অথবা চিম্বুক পর্যটন কেন্দ্রের সামনে আদিবাসীদের হোটেল আছে খেয়ে নিতে পারবেন। তবে এইসব ক্ষেত্রে আগেই অর্ডার করে রাখলে খাবার রেডি পাবেন। নয়তো খাবারের জন্যে অপেক্ষা করতে হতে পারে। আর সাথে করে কিছু শুকনো খাবার ও পানি নিয়ে যাবেন।

বান্দরবান থেকে নিলিগিরি দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। শুধু যাওয়া ও আসাতেই প্রায় ৫ ঘন্টা সময় লাগবে। পথের অনন্যা জায়গা ভাল করে দেখা ও নীলগিরি ঘুরে বেড়ানো এবং যাওয়া আসা মিলিয়ে ৭-৮ ঘন্টা লেগে যাবে। তাই সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

নীলগিরি ঘুরে আবার বান্দরবান ফিরে আসুন। দিন শেষে রাতের বাসে আপনার গন্তব্যে রওনা হয়ে যান। বাস উঠার আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন অথবা হাইওয়েতে খেয়ে নিতে পারবেন। ট্রেনে যেতে চাইলে আগে টিকেট কাটা থাকলে বান্দরবান থেকে বাসে চট্টগ্রাম চলে আসুন। চট্টগ্রাম এসে সেখান থেকে ট্রেনে ঢাকায় ফিরতে পারেন।

বান্দরবান যাওয়ার উপায়

ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে এস. আলম, ইউনিক, হানিফ, শ্যামলি, সৌদিয়া, সেন্টমার্টিন ইত্যাদি পরিবহনের বাস বান্দরবানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। জনপ্রতি এসব বাসের ভাড়া যথাক্রমে নন-এসি ৫৫০ – ৬৫০ টাকা ও এসি ৯৫০ – ১৫০০ টাকা। ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্রগ্রাম গিয়ে সেখান থেকে বান্দরবান যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে প্রতিদিনই সোনার বাংলা, সুবর্ণ, মহানগর ইত্যাদি ট্রেন চটগ্রাম যায়। শ্রেনীভেদে ট্রেনের টিকেটের মূল্য ৩২০-১৫০০ টাকা।

চট্টগ্রামের বদ্দারহাট বাস স্টেশন থেকে বান্দরবানে যেতে পারবেন। পূবালী ও পূর্বানী নামের দুটি বাদ বান্দারবানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ দুটি বাসে জনপ্রতি ২২০ টাকা ভাড়া লাগে। এছাড়া ধামপাড়া বাস স্টপেজ থেকে বান্দরবান যাওয়া যায়। চাইলে রেন্ট এ কারে করেও চট্রগ্রাম থেকে বান্দরবান যেতে পারবেন, মাইক্রোবাসের ভাড়া ২,৫০০-৩,৫০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

বান্দরবান শহর ও তার আশেপাশেই বেশ কিছু হোটেল ও রিসোর্ট গুলোর রয়েছে। বান্দরবান শহরে থাকার জন্যে যে সকল হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে তার মধ্যে:

হোটেল হিল ভিউ : বান্দরবান শহরের বাস স্ট্যান্ড এর পাশেই। ভাড়া ১০০০ থেকে ২৫০০ টাকা।
হোটেল হিলটন : বান্দরবান শহরের বাস স্ট্যান্ড এর কাছেই। ভাড়া ১২০০ থেকে ৩৫০০ টাকা।
হোটেল প্লাজা : বাস স্ট্যান্ড থেকে ৫মিনিট হাঁটা দূরত্বে। ভাড়া ৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা।
রিভার ভিউ : শহরের সাঙ্গু নদীর তীর ঘেষে হোটেলটির অবস্থান। ভাড়া ৬০০ থেকে ২০০০ টাকা।
পর্যটন মোটেল : পাহাড় ও লেকের পাশেই অবস্থিত। শহর থেকে ৪ কি:মি: দুরে মেঘলায় অবস্থিত। ভাড়া ১২০০ থেকে ২৫০০ টাকা।

এছাড়া সাইরু রিসোর্ট সহ আরও বেশ কিছু সুন্দর রিসোর্ট রয়েছে বান্দরবানে। বান্দরবানের সবচেয়ে সুন্দর হোটেল ও রিসোর্ট নিয়ে আমাদের ভিডিও রিভিউ গাইড দেখুন ইউটিউবে বান্দরবানের সেরা ১০ রিসোর্ট অথবা পড়ে নিন বান্দরবানের সকল হোটেল রিসোর্ট লিস্ট

খাবেন কোথায়

বান্দরবান শহরে খাওয়ার জন্যে রয়েছে বেশি কিছু রেস্তোরা, তার মধ্যে তাজিং ডং ক্যাফে, মেঘদূত ক্যাফে, ফুড প্লেস রেস্টুরেন্ট, রুপসী বাংলা রেস্টুরেন্ট, রী সং সং, কলাপাতা রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি।

বান্দরবান ভ্রমণ খরচ

শুরুতেই বলে রাখি ভ্রমণ খরচ অনেকাংশেই ভ্রমণের সময় এবং ভ্রমণকারী কিভাবে খরচ করবে তার উপর। অনেকেই হয়তো খরচের চেয়ে আরামটাই প্রাধান্য দেয় আবার অনেকেই হয়তো আরামের চেয়ে কম খরচের দিকেই প্রাধান্য দেয়। তবে বান্দরবান ভ্রমণের খরচ সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারনা দেওয়া যেতে পারে। ধরে নিচ্ছি আপনি ঢাকা থেকে ঘুরতে যাবেন এবং আপনারা একসাথে ৬ জন গ্রুপ করে বেড়াবেন। ১ রাত দুই দিনের ট্যুরে কত খরচ হতে পারে তার ধারণা পাবেন এইখান থেকে। যেহেতু ৬ জন ধরে নিচ্ছি বান্দরবান ঘুরে দেখার জন্যে মহেন্দ্র ছোট জীপ গাড়ি ব্যবহার করেবন।

বাস ভাড়া : ৬২০*২ = ১২৪০ টাকা জনপ্রতি (নন এসি যাওয়া ও ফিরে আসা)
এক রাতের হোটেল ভাড়া : ১৮০০ টাকা / ২জন = ৯০০ টাকা জনপ্রতি
প্রথম দিনের যানবাহন ভাড়া : ১৫০০ টাকা / ৬ জন = ২৫০ টাকা জনপ্রতি
দ্বিতীয় দিনের যানবাহন ভাড়া : ২৮০০ টাকা / ৬ জন = ৪৬৬ টাকা জনপ্রতি
প্রথম দিন ৩ বেলা খাবার : ১২০ + ১৫০ + ২০০ = ৪৭০ টাকা জনপ্রতি
দ্বিতীয় দিন ৩ বেলা খাবার : ১২০ + ১৫০ + ২০০ = ৪৭০ টাকা জনপ্রতি
অন্যান্য খরচ : ৫০০ টাকা জনপ্রতি

তাহলে জনপ্রতি মোট খরচ হবে প্রায় ৪৩০০ টাকা। এই খরচ সবকিছুর মাঝামাঝি খরচ হিসেবে ধরা হয়েছে। এখন এই খরচ চাইলে আপনি আরও বাড়াতে পারবেন; যেমন এসি বাসে যাওয়া আসা, এসি হোটেলে বা ভালো রিসোর্টে থাকা এবং খাবারের ক্ষেত্রে আরও খরচ করা। আবার আপনি ব্যাকপেকার ধরণের ভ্রমণকারী হলে খরচ কমাতেও পারবেন।

বাজেট ট্যুর? কম খরচে কিভাবে বেড়াবেন?

অনেকেই জানতে চান কম খরচে বান্দরবান ভ্রমণ সম্পর্কে। যারা বাজেট ট্যুর দিতে চান তাদের জন্যে আমাদের কিছু টিপস। আশা করি এই টিপস গুলো কাজে লাগালে কম খরচে বান্দরবান ঘুরে বেড়াতে পারবেন।

অফসিজন : যে কোন ভ্রমণ স্থানে বেড়ানর খরচ কমাতে পারেন অফসিজনে ভ্রমণ করে। সাধারণত বান্দরবানে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী মাস পিক সিজন থাকে। তাই এই সময়ে না গিয়ে বছরের অন্য সময়ে বেড়াতে গেলে অনেক কিছুতেই খরচ কম হবে।

যানবাহন : রাতে নন এসি বাসে করে বান্দরবান গেলে যাওয়ার ভাড়া কম লাগবে। রাতের বাস জার্নিও তুলনামূলক আরামের হবে। এছাড়া ট্রেনে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যাবার সুযোগ থাকলে ট্রেনের শোভনে চেয়ারে চট্টগ্রাম গিয়ে বহেদ্দারহাট থেকে লোকাল বাসে বান্দরবান চলে যান। যাওয়ার খরচ কমে যাবে।

নন এসি শেয়ারড হোটেল রুম : থাকার জন্যে পছন্দমত নন এসি হোটেলে শেয়ার করে থাকুন। ডাবল বেডের রুমে খুব সহজেই ৪ জন আরামে থাকতে পারবেন। এতে থাকার খরচ অনেক কমে যাবে।

শেয়ার করে খাওয়া দাওয়া : খাবারের ক্ষেত্রেও শেয়ার করে খেতে পারেন। একেকজনের জন্যে কয়েক পদের খাবার না নিয়ে একসাথে কয়েকজনের জন্যে কয়েকপদের খাবার নিয়ে তা শেয়ার করে খেতে পারলে খাওয়া দাওয়ার খরচ অনেকাংশে কম লাগবে।

গ্রুপ করে যাওয়া : গ্রুপ করে গেলে সবকিছুতেই খরচ ভাগাভাগি হয়ে কমে যাবে। আপনারা একসাথে কত জন সেই অনুযায়ীও গাড়ি ঠিক করে নিতে পারবেন। আপনার যদি সদস্য সংখ্যা কম হোন, তাহলে চেষ্টা করুন অন্য কোন গ্রুপের সাথে কথা বলে যুক্ত হয়ে যেতে। এতে সেখানের বিভিন্ন স্থান গুলো ঘুরে বেড়ানোর জন্যে গাড়ির খরচ ভাগাভাগি করে নিতে পারবেন।

আশা করি বান্দরবান ভ্রমণ নিয়ে সকল তথ্যই আপনি পেয়ে গেছেন। আর সব গুলো জায়গারই আলাদা আলাদা করে বিস্তারিত তথ্য পাবেন আমাদের ভ্রমণ গাইডে এই পেইজে। তারপরেও কিছু জানার থাকলে মন্তব্য করতে পারেন অথবা আমাদের ফেসবুকে পেইজে মেসেজ করতে পারেন। কোন তথ্যগত ভূল বা আপনার বান্দরবান ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও জানাতে পারেন সবাইকে। আমাদের এই লেখা ভালো লেগে থাকলে শেয়ার করবেন ফেসবুক সহ অন্যান্য সোশাল মিডিয়ায়। এতে হয়তো আপনার পরিচিত অনেকের কাজে লাগবে আমাদের এই বান্দরবান ট্যুর প্ল্যান।