দার্জিলিং ভ্রমণ গাইড
দার্জিলিং (Darjeeling) ভূ-পৃষ্ট থেকে ৭,১০০ ফুট উচ্চতায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই শহরে প্রায় পুরো বছর জুড়েই ঠাণ্ডা থাকে। মেঘের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত দার্জিলিং তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, চা এবং রেলওয়ের জন্য বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। দার্জিলিংয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার অনুপম সৌন্দর্য ও টাইগার হিলের সূর্যোদয় দেখার সাথে সাথে অসংখ্য দর্শনীয় স্থানের জন্য প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক এই শহরে ভিড় জমায়।
দার্জিলিংয়ে দর্শনীয় স্থান
ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই দার্জিলিং তাঁর অপূর্ব রুপ এবং উপযোগী জলবায়ুর কারণে অবকাশ যাপনের আদর্শ স্থান হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য নয় দার্জিলিং-এ অবস্থিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এশিয়ার শিক্ষার্থীদের সমানভাবে আকর্ষণ করে।
টাইগার হিল (Tiger Hill) : টাইগার হিল থেকে সূর্যাস্ত দেখার অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য চোখে পরার মতো। আর পর্যটকরা এই পাহাড়ের শীর্ষ থেকে মাউন্ট এভারেস্ট ও কাঞ্ছনজঙ্ঘার চমৎকার ভিউ দেখার সুযোগ সহজে হাতছাড়া করে না। সকাল ৫টার মধ্যে এখানে আসলে পর্যটকদের ভিড় অনেকটাই এড়ানো যাবে।
বাতাসিয়া লুপ (Batasiya Loop): দার্জিলিং শহর থেকে মাত্র ৫ কিলো দূরত্বে অবস্থিত বাতাসিয়া লুপ দার্জিলিংয়ের মনোরম ট্রেন রুট গুলোর মধ্যে অন্যতম। পাহাড়ের শীর্ষ টানেলের মধ্য দিয়ে ট্রেন জার্নি এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা যে কোনও পর্যটকদের জন্য। এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও মুগ্ধ করার মতো।
দার্জিলিং হিমালায়ান রেলওয়ে (Darjeeling Himalayan Railway) : ভারতের নিঊ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং এর পাহাড়ী আঁকাবাঁকা রাস্তা ও বাঁকের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করা ছোট্ট বাষ্প ইঞ্জিন চালিত ট্রেন দার্জিলিংয়ে পর্যটকদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। এই রেলওয়েই একসময় দেশের প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থা ছিল। “দার্জিলিং টয় ট্রেন” হিসেবেও পরিচিত এই ট্রেন জার্নি দার্জিলিং এর এক মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা। অনেকেই কোলকাতা ও বলিউডের বিভিন্ন মুভিতে এই ট্রেনের চারপাশের চমৎকার দৃশ্য দেখে থাকবেন।
দার্জিলিং চিড়িয়াখানা (Darjeeling Zoo): প্রায় ৬৭.৫৬ একরের এই পার্ক হিমালায়ান পার্ক নামেও পরিচিত। পাহাড়ে অবস্থিত এই পার্কে হিমালায়ান অঞ্ছলের স্নো লিওপার্ড, হিমালায়ান নেকড়ে, ক্লাউডেড লিওপার্ড, কালো ভাল্লুক ও রেড পাণ্ডার মতো বিরল কিছু প্রাণীসহ পাখি ও সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীদের দেখা মিলবে। এই পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ মিউজিয়াম আরেকটি বিশেষ আকর্ষণ পর্যটকদের জন্য। এইপার্কে প্রবেশ মূল্য ৬০ রুপি আর ক্যামেরার জন্য বাড়তি ১০ রুপি দিতে হবে।
এছাড়াও দার্জিলিংয়ে আরও বেশ কিছু পার্ক রয়েছে যেমন- নাইটিংগেল পার্ক (Nightingale Park, এখানে টুরিস্ট সিজনে নেপালি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে), ঝর্ণার পাশে অবস্থিত দার্জিলিং রক গার্ডেন (Darjeeling Rock Garden) ও সিঙ্গালিয়া ন্যাশনাল পার্ক (Singalia National Park)।
হ্যাপি ভ্যালি টি ষ্টেট (Happy Valley Tea State): ১৮৫৪ সালে স্থাপিত দার্জিলিং শহরের দ্বিতীয় প্রাচীন চা বাগান। এই সুন্দর চা বাগান থেকে পুরো শহরের প্যানোরোমিক ভিউ দেখা যায়। ১০০ রুপি খরচ করে গাইডের মাধ্যমে পুরো চা বাগানও চা উৎপাদন দেখতে পারবেন। আবার ইচ্ছে থাকলে এখানে চা খাওয়ার সাথে চা পাতা কেনার ও সুযোগ আছে।
বেঙ্গল ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম (Bengal Natural History Museum): পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরে আসার জন্য সুন্দর একটি জায়গা। এই জাদুঘরের মধ্যেই হিমালায়ান মাউন্টেনারিং ইন্সটিটিউট অবস্থিত। বিভিন্ন পশু পাখির দেখা পাওয়া যাবে এই মিউজিয়ামে। ১০০-১৫০ রুপি খরচ করে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে ছবি তোলারও সুযোগ আছে।
হিমালায়ান মাউন্টেননিয়ারিং ইন্সটিটিউট (Himalayan Mountaineering Institute): বিশ্বের অন্যতম পর্বতারোহণ কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃত এই ইন্সটিটিউটের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল পর্বতারোহণের ব্যাপারে সাধারন মানুষকে উৎসাহী করা। বিশ্বের অসংখ্য পর্বতারোহী তাদের দক্ষতা বিকাশের জন্য এখানে আসে। আর বর্তমানে পর্যটন স্পট হিসেবেও এই ইন্সটিটিউট যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই ইন্সটিটিউট থেকে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ চূড়া কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউ সত্যিই মনোমুগ্ধকর।
প্যাগোডা ও মনেস্ট্রিঃ দার্জিলিংয়ের প্যাগোডা ও মনেস্ট্রির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ঘুম মনেস্ট্রি (Ghum Monastery)। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০,০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত প্রাচীন এই মন্দিরের ১৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট বৌদ্ধ মূর্তি ও এখান থেকে সুন্দর সূর্যোদয় দেখা যায়। শান্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিত চারটি বৌদ্ধ মূর্তির পিচ প্যাগোডা (Peace Pagoda) অনেক ভালো লাগবে। জাপানিজ বৌদ্ধ মন্দিরে (Japanese Buddist Temple) জাপানিদের ঐতিহ্যবাহী স্টাইলে তৈরি করা বেশ কিছু মন্দির ও প্যাগোডা দেখার সুযোগ হবে এই মন্দিরে।
এছাড়াও সময় থাকলে প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী তেনজিং-রক-এর স্মৃতিস্তম্ভ, শরণার্থী কেন্দ্র তিব্বতিয়ান সেলফ হেল্প সেন্টার, ৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত দার্জিলিং গোরখা স্টেডিয়াম, দার্জিলিং মিউজিয়াম, আভা আর্ট গ্যালারি, শতবর্ষের প্রাচীন দিরদাহাম টেম্পল, গঙ্গামায়া পার্ক, হিমালয় কন্যা কাঞ্চন-জংঘা এবং ভিক্টোরিয়া ফলস এর মতো জায়গাগুলোও ঘুরে দেখতে পারেন।
দার্জিলিংয়ের বিশেষ আকর্ষণঃ দার্জিলিং রোপ ওয়ে ( ৫৫০০ ফিট উপর থেকে ১৬ কিলো দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ক্যাবল কারে চা বাগানের উপর ঘুরে বেড়ানো), রিভার রাফটিং ইন তিস্তা ও ট্রেকিং।
ভ্রমণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত সময়
দার্জিলিং-এ এপ্রিল থেকে জুন ও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের সময়টাতে আবহাওয়া সবচেয়ে ভালো থাকে। আর তাই এই ছয় মাস দার্জিলিং ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে সুন্দর সময়।
দার্জিলিং কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাসে : সড়ক পথে যেতে চাইলে আপনার ভিসা কোন পোর্ট দিয়ে করা তার উপর নির্ভর করবে। ফুলবাড়ি দিয়ে ভিসা করা থাকলে ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা সীমান্তে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষে ফুলবাড়ি থেকে বাসে শিলিগুড়ি জংশন যেতে হবে। চেংড়াবান্ধা দিয়ে ভিসা করা থাকলে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের বুড়িমারি সী্মান্তে ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া শেষ চ্যাংড়াবান্দা থেকে বাসে শিলিগুড়ি চলে আসুন। যেভাবেই যান তারপর শিলিগুড়ি জিপ স্টেশন থেকে দার্জিলিংগামী টাটা সুমো বা কমান্ডার জিপের টিকিট কেটে সরাসরি দার্জিলিং চলে আসতে পারবেন। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলং যেতে আড়াই ঘন্টা সময় লাগে।
ঢাকা থেকে বিমানে: ঢাকা থেকে বিমানে যেতে চাইলে ঢাকা – কলকাতা – বাগডোগরা ফ্লাইটে যেতে হবে। বাগডোগরা এয়ারপোর্টে পৌঁছে সেখান থেকে ট্যাক্সিতে দার্জিলিং যেতে পারবেন।
কলকাতা থেকে দার্জিলিং: কলকাতা থেকে ট্রেনে দার্জিলিং যেতে চাইলে ট্যুরিস্টদের জন্য নির্ধারিত কাউন্টার ফেয়ারলি প্যালেস থেকে টিকেট সংগ্রহ করুন। দার্জিলিং-এ যাওয়ার সবচেয়ে কাছের রেলওয়ে স্টেশন হচ্ছে নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশন। এই রেলস্টেশন থেকে দার্জিলিং-এর দূরত্ব ৮৮ কিলোমিটার। কলকাতার শিয়ালদহ রেল স্টেশন থেকে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটের দার্জিলিং মেইল ট্রেন ছেড়ে যায়। পরদিন সকাল ১০টায় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন পৌঁছাবে। জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে রিকশায় শিলিগুড়ি জিপ স্টেশন এসে দার্জিলিংগামী টাটা সুমো বা কমান্ডার জিপে দার্জিলিং পৌঁছাতে পারবেন।
দার্জিলিং ট্যুর প্ল্যান
দার্জিলিং ঘুরে দেখার একটা ছোট ও কম খরচের ট্যুর প্ল্যানের আইডিয়াঃ
- ১ম দিন : রাতের বাসে ঢাকা থেকে বুড়িমারীর উদ্দেশ্যে রওনা (নন এসি/এসি বাস)
- ২য় দিন : সকালে বুড়িমারী নেমে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ শেষে শেয়ার্ড/রিসার্ভ জীপ অথবা বাসে শিলিগুড়ি। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়ে রিজার্ভ/শেয়ার্ড টাটা সুমো নিয়ে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টার পাহাড়ি পথ দেখতে দেখতে দার্জিলিং। হোটেলে চেকইন করে ফ্রেশ হয়ে শহরের আশপাশ ঘুরে নিতে পারেন সেইদিন বিকেল সন্ধ্যায়।
- ৩য় দিন : সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে রিজার্ভ জীপ দার্জিলিং শহর এর দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরে বেড়াবেন। দুপুরে কোন রেস্টুরেন্টে খেয়ে নিন। সন্ধ্যারে আগে হোটেলে ফিরে আসুন। সন্ধ্যার পরের সময়টা যেভাবে ইচ্ছে কাটাতে পারেন। শপিং কিংবা অন্য কিছু করার থাকলে করে নিন। রাতে খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন।
- ৪র্থ দিন : ফিরে আসার দিন। খুব ভোরে বের হয়ে পড়ুন। জীপ নিয়ে চলে যান টাইগার হিল। সেখান থেকে সূর্যোদয় দেখুন আর উপভোগ করুন পৃথিবীর ৩য় উচ্চতম পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘা এর অসাধারণ ভিউ। তারপর ঘুরে আশেপাশে আরও কিছু দেখার বাকি থাকলে ঘুরে দেখে নিতে পারেন। তারপর চলে আসুন শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি থেকে বর্ডারে এসে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ শেষে বর্ডার পার হয়ে সন্ধ্যায় উঠে পড়ুন ঢাকার বাসে।
দার্জিলিং ভ্রমণ খরচ
খরচ কত হবে তা নির্ভর করে সাধারণত আপনি কোন সময় যাচ্ছেন, কতদিন থাকবেন, কেমন মানের হোটেলে থাকবেন, খাবারের পিছনে কেমন খরচ করবেন। এমন অনেক গুলো বিষয়ের উপর। মোটামুটি বাজেটের কথা চিন্তা করলে ঢাকা থেকে দার্জিলিংয়ে যাতায়াত, থাকা, খাওয়া বাবদ ৫ রাত ৪ দিন (৩ রাত দার্জিলিং থাকা) থাকতে জনপ্রতি ১৫,০০০ থেকে ১৮,০০০ টাকা খরচ হতে পারে। আর কম খরচে ঘুরতে চাইলে কয়েকজন মিলে গ্রুপ করে গেলে এবং শেয়ার জীপে যাতায়াত, হোটেলে শেয়ার করে থাকা ও খাওয়া দাওয়া এই সবকিছুতে মিলেমিশে করলে জনপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকার মধ্যেও সুন্দর করে ঘুরে আসা সম্ভব। যদি ৩ রাত না থেকে ২ রাত থাকেন তাহলে খরচ আরও কমে যাবে।
দার্জিলিংয়ে কোথায় থাকবেন
দার্জিলিং-এ বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল ও হোমস্টে রয়েছে। বাজেট হোটেলের মধ্যে হোটেল টাওয়ার ভিউ, দেজং রেট্রেট, এভারেস্ট গ্লোরি, কি কিবা ধী, হোটেল ইভি ক্যাসেল, হোটেল এভারেস্ট গ্লোরি, পাহাড়ি সোল, বেনু’স এর মতো হোটেল গুলোতে ৬০০-৮০০ এর মধ্যে দুই জনের জন্য থাকার রুম পেয়ে যাবেন।
আবার একটু বেশী বাজেটের মধ্যে হলেও পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় নিউ সিঙ্গালিয়া পার্ক হোমস্টে, হিমশিখা হোমস্টে, ফ্রাতেরনিতি হোমস্টে, মাউন্টেইন হোমস্টে এর মতো হোম স্টে গুলোতে ৯০০-২০০০ টাকার মধ্যে দুই জন থাকতে পারবেন।
অনালাইনে রুম বুকিং এর ক্ষেত্রে booking.com, hotels.com, expedia এর মতো সাইটগুলো চেক করে দেখবেন। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী অনেক হোটেল পেয়ে যাবেন। কোন হোটেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্যেও এই সাইট গুলোর রিভিউ ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গুলো দেখে নিতে পারেন।
দার্জিলিংয়ে কোথায় কি খাবেন
দার্জিলিং এর স্থানীয়রা ভাতের সাথে গরুর মাংস এবং মসুর ডাল খেতে খুব পছন্দ করেন। রেস্টুরেন্টের মধ্যেকুঙ্গা, হাস্টি টেস্টি, পেনাং, সোনামস কিচেন, কেভেন্টার’স,গ্লেনারিস, শাংরি লা, কেভেন্টারস, লুনার এর মতো রেস্টুরেন্ট গুলোতে দার্জিলিং এর স্থানীয় খাবারের পাশাপাশি থাই, ইন্ডিয়ান বা বাঙ্গালি খাবার পাবেন। আর জনপ্রিয় স্থানীয় খাবারের মধ্যে গানড্রাক (গাঁজানো সরিষা পাতা), মম (মাংস বা সবজি দিয়ে পিঠার মত খাবার), থুপকা (মাংস, নুডলস, ডিম ও সবজি দিয়ে তৈরি ঘন স্যুপ), আলু দম, নাগা প্ল্যাটার এবং চ্যাং (স্থানীয় বিয়ার) খেয়ে দেখবেন। আর অবশ্যই মাটির ছোট কাপে দার্জিলিং এর স্পেশাল চা ও দার্জিলিং এর কমলা খেতে ভুলবেন না।
দার্জিলিংয়ে কেনাকাটা
দার্জিলিং শহরের লাডেন-লা রোডে বেশকিছু ছোট-বড় মার্কেট ও দোকান রয়েছে। এইসব মার্কেট থেকে নিশ্চিন্তে প্রয়োজনীয় শীতের পোশাক, হাতমোজা, মাফলার, সোয়েটার, লেদার জ্যাকেট, নেপালি শাল, শাড়ি, লেদার সু ও প্রিয়জনদের জন্য গিফট আইটেম কিনতে পারেন। টাইগার হিলের বেশ কিছু লোকাল শপ থেকে অন্যান্য জিনিসের সাথে সাথে সুভেনিয়র ও কিনতে পারবেন। আর ভালো চা পাতা কেনার ক্ষেত্রে লোকাল কোনও দোকান থেকে কেনার চেয়ে ভালো কোনো ভালো টি ষ্টেট থেকে কেনা সবচেয়ে ভালো। দাম ও কম পাবেন ও বিভিন্ন গ্রেডের চা পাতাও খুঁজে পাবেন।
কিছু ভ্রমণ টিপস
- বর্ষা মৌসুমে দার্জিলিং-এ পাহাড় ধস ঘটে তাই এই সময়টা দার্জিলিং-এ না যাওয়াই ভালো।
- পাহাড়ের উপর অবস্থিত টুরিস্ট স্পটে যাওয়ার ক্ষেত্রে হিল স্যান্ডেল এড়িয়ে ভালো মানের স্লিপার বা স্যান্ডেল পড়বেন।
- দার্জিলিংয়ের লোকাল দোকানের চেয়ে বড় বড় শপিং মল বা মার্কেট থেকে কেনাকাটা করলে ভালো জিনিস পাবেন ও ঠকার সম্ভাবনাও কম থাকবে।
- পিকসিজনে পর্যটকদের প্রচণ্ড ভিড় থাকে আর তাই হোটেল গুলোতেই রুম পাওয়ার জটিলতা এড়ানোর জন্য অবশ্যই অগ্রিম হোটেল বুকিং দিয়ে রাখবেন।
- দার্জিলিং এ হোটেলে রুম বুক করার আগে হোটেলে গরম পানি আর রুম হিটারের ব্যবস্থা আছে কিনা জেনে নিন।
- হিমালায়ান পার্ক যথাযথ কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত পরিষ্কার পরিচ্ছন একটি পার্ক তাই পার্কে ঘুরাঘুরি করা সময় যথা সম্ভব পরিচ্ছনতা বজায় রাখবেন ও কোনও প্রাণীদের অযথা বিরক্ত করবেন না।
- দার্জিলিং রক গার্ডেন থেকে খাবারের রেস্টুরেন্টগুলো বেশ দূরে তাই এখানে ঘুরতে গেলে সাথে খাবার নিয়ে যাওয়া ভালো।
- অবশ্যই টাকা বা ডলার সরকার অনুমোদিত ডিলারের কাছে থেকে রুপিতে পরিবর্তন করে নিতে ভুলবেন না।
No comments